স্বামী বেকার হলেও বিবাহবিচ্ছেদের পর স্ত্রীর খরচ যোগাতেই হবে, পর্যবেক্ষণ এলাহাবাদ হাইকোর্টের।
ব্যাপারটা কি হয়েছে? ভালো করে বুঝুন
প্রথমে পারিবারিক আদালতে মামলা করেছিল সেই যুবক। পারিবারিক আদালতে তার আবেদন খারিজ হয়ে যায়। আইন অনুযায়ী স্ত্রীর ভরণপোষণ বাবদ নির্দিষ্ট খরচ তাকে দিতেই হবে এমনটাই রায় দেয় পারিবারিক আদালত। পারিবারিক আদালতের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যুবক এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। বিচারপতি রেনু আগারওয়ালের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, বিবাহ বিচ্ছেদের পর স্থির ভরণপোষণের খরচ যোগানো স্বামীর কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। সেক্ষেত্রে স্বামী কখনোই সেই কর্তব্য কে অস্বীকার করতে পারেন না। এবং তিনি সেই কর্তব্য কোন অজুহাতেও এড়িয়ে যেতে পারেন না। তিনি কম টাকার মাইনের চাকরি করলেও স্ত্রীর খরচ যোগানোর জন্যই তাকে রোজগার করতেই হবে এবং স্ত্রীর খরচ তাকে জোগাতেই হবে।
শুধুমাত্র এতোটুকুন নির্দেশ দিয়েই থেমে থাকেনি আদালত। রোজগারের জন্য যুবককে পরামর্শ দিয়েছে আদালত। বিচারপতি জানিয়েছেন যে, একজন অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে যুবক দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত রোজগার করতে পারে। সেই কারণে স্ত্রীর ভরণপোষণের বন্দোবস্ত তাকেই করতে হবে। দু হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জানা গেছে যে এই দম্পতির বিয়ে হয়েছিল ২০১৫ সালে। তার পরের বছরই ঘর ছেড়ে চলে যান সেই মহিলা। স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে তিনি এফআইআর করেছিলেন। তার অভিযোগ ছিল যে, তার কাছ থেকে পনের টাকা আদায়ের জন্য চাপ দিতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা। তার উপরে চলত বিভিন্ন ধরনের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন।
এদিকে স্বামীর ঘর থেকে বেরিয়ে আসার পরে মহিলা শিক্ষাটা হিসেবে একটি স্কুলে যোগ দেন। সেখান থেকে তিনি প্রতি মাসে 10 হাজার টাকা করে রোজগার করছেন। এই যুক্তি দেখেই যুবক স্ত্রীর ভরণপোষণ জোগাতে পারবে না বলে আদালতে চলে যান। যুবক জানান, যে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ, চিকিৎসা চলছে। তার নিজের বাবা-মায়ের দায়িত্ব তার কাঁধেই রয়েছে। বাড়ি ভাড়ার খরচও তাকেই জোগাড় করতে হয়। সেই কারণে সে তার স্ত্রীর কোন ভরণপোষণ জোগাতে পারবে না। এমনটাই যুক্তি দিয়েছিল যুবকের আইনজীবী। কিন্তু আদালত তাদের সেই আবেদন গ্রাহ্য করেনি। উল্টে রায় দিয়েছে, যে যুবককে, সেই যুবক বেকার হলেও, তার স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব তাকে নিতেই হবে।
0 মন্তব্যসমূহ